ঈশ্বরের সৃষ্টিকর্ম
শুরুতেই প্রভু ঈশ্বর সবকিছু সৃস্টি করলেন। ঈশ্বর তাঁর সমস্ত সৃস্টি কর্ম ছয় দিনের মধ্যে করলেন। তারপর ঈশ্বর পৃথিবী সৃস্টি করলেন, এমতাবস্থায় পৃথিবী নিরবময় অন্ধকার ও ফাঁকা ছিল কারণ তিনি তখনো কিছুই সৃস্টি করেননি । কিন্তু তাঁর আত্না জলের উপর ভেসে বেড়াচ্ছিল।
তারপর প্রভু ঈশ্বর বললেন “আলো হোক” বলার সাথে আলো সৃস্টি হলো। ঈশ্বর দেখলেন, সেই আলো ভালো হয়েছে এবং তিনি এ আলোকে “দিন” বলে নাম দিলেন ।তিনি অন্ধকার থেকে আলোকে বিচ্ছিন্ন করে আলোকে “দিন” এবং অন্ধকারকে “রাত” নাম দিলেন। এই হোল প্রথম দিন।
তারপর ঈশ্বর বললেন, “জলের মধ্যে একটা বিস্তীর্ণ স্থান সৃস্টি হোক”, বলার সাথে বিস্তীর্ণ স্থান সৃস্টি হলো, ঈশ্বর যে বিস্তীর্ণ জায়গা সৃস্টি করলেন তার নাম দিলেন “আকাশ।“এ হলো দিতীয় দিন।
এরপর প্রভু ঈশ্বর বললেন “আকাশের সব জল এক জায়গায় জমা হোক এবং শুকনো জায়গা দেখা দিক”, তাই হলো। ঈশ্বর সেই শুকনো জায়গা নাম দিলেন “ভুমি”।আর সেই জমা হওয়ার জলের নাম দিলেন “সমুদ্র” । ঈশ্বর দেখলন যে, সেটি ভাল হয়েছে।
তারপর ঈশ্বর বললেন যে, “ভুমির মধ্যেই বিভিন্ন জাতের গাছ ও চারাগাছ গজিয়ে উঠুক”, আর তাই হলো। ঈশ্বর দেখলেন যে, তা চমৎকার হয়েছে ।এ হলো তৃতীয় দিন।
চতুর্থ দিনে সৃষ্টিকর্মে প্রভু ঈশ্বর বললেন, “আকাশের মধ্যে আলো দেয় এমন কিছু দেখা দিক”আর তাতে চন্দ্র, সুর্য এবং তারা আবির্ভুত হলো । ঈশ্বর সেগুলো সৃস্টি করলেন যাতে পৃথিবীর উপর আলো দিয়ে ঋতু ও বছর হিসাবে চিহ্ন হয়ে থাকুক। ঈশ্বর দেখলেন যে, তা চমৎকার হয়েছে। এ হলো চতুর্থ দিন।
ঈশ্বর পঞ্চম দিনে সৃষ্টিকর্মে বললেন, “জলের বিভিন্ন জীবন্ত প্রানী ভরে উঠুক আর আকাশের মধ্যে বিভিন্ন পাখি উড়ে বেড়াক” । এভাবে তিনি জলের মধ্যে ঘুরে বেড়ানো বিভিন্ন জাতের প্রানী এবং পাখি সৃষ্টি করলেন। ঈশ্বর দেখলেন যে, তা চমৎকার হয়েছে এবং তাদের আশীর্বাদ করলেন ।
ষষ্ঠ দিনে সৃস্টিকর্মে ঈশ্বর বললেন, ভূমিতে নিজস্ব প্রজাতি অনুসারে জীবিত প্রাণী উৎপন্ন হোক। গৃহপালিত পশু,জমির সরীসৃপ প্রাণী এবং বুনো পশু প্রত্যেকেই নিজস্ব প্রজাতি অনুসারে হোক। আর তা সেইমতো হোল।ঈশ্বর দেখলেন যে, তা চমৎকার হইয়েছে ।
তারপর ঈশ্বর বললেন, “এসো আমরা আমাদের প্রতিমুর্তীতে আমাদের সাদৃশ্য মানুষ তৈরী করি। তারা যেন সমস্ত পৃথিবী এবং প্রানীগুলোর উপড় রাজত্ব করে”।
তাই প্রভু ঈশ্বর মাটির ধূলো নিলেন, এ মাটি দিয়ে একজন পুরুষ মানুষ তৈরী করলেন এবং তাকে ফুঁ দিয়ে তার ভিতরে জীবন বায়ু ঢুকিয়ে দিলেন। তার নাম রাখলেন আদম। ঈশ্বর একটি বাগান তৈরী করলেন এবং সেখানে আদমকে বাগানে কাজ করার এবং সেটি যত্ম নেয়ার জন্য তাকে সেখানে রাখলেন।
বাগানের ঠিক মাঝখানে বিষেশ দুটি গাছ সৃস্টি করলেন । একটি জীবন দায়ী গাছ এবং অপরটি ভালমন্দ জ্ঞান্দায়ী গাছ। ঈশ্বর আদমকে বললেন, তুমি তোমার খুশীমতো বাগানে যে কোন গাছের ফল খেতে পার কিন্তু ভালমন্দ জ্ঞানের যে গাছটি রয়েছে তা তুমি খাবে না। কারণ যেদিন তুমি তার ফল খাবে সেদিন অবশ্যই তোমার মৃত্যু হবে।
তারপর ঈশ্বর বললেন, “মানুষটি পক্ষে একা থাকতে ভাল নয়”।কিন্তু শুধু পশু নয় আমি আদমের জন্য একজন উপযুক্ত সঙ্গী তৈরী করব”, যাতে তাঁকে সাহায্য করতে পারে।
তাই ঈশ্বর আদমের উপর একটা গভী্র ঘুম নিয়ে আসলেন, আর তাতে তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন। তখন তিনি তার একটা পাঁজর তুলে নিলেন । আদম থেকে তুলে নেওয়া সেই পাঁজরটা দিয়ে একজন মেয়ে মানুষ তৈরী করে তাকে আদমের কাছে নিয়ে গেলেন।
আদম বললেন, তিনি আমার মতো দেখতে, এর নাম হবে “নারি” কারণ একে নর থেকে নেওয়া হয়েছে। এজন্য একজন পুরুষ তার বাবা মাকে ছেড়ে তার স্ত্রীর সাথে সংযুক্ত হবে, এবং তারা একাঙ্গ হবে।
ঈশ্বর দুজনকে তাঁর মতো করেই মানুষ সৃষ্টি করলেন। ঈশ্বর তাঁদের আশীর্বাদ করে বললেন, “তোমরা বংশ বৃব্ধির ক্ষ্মতায় পূর্ণ হোও আর নিজেদের সন্তান ও নাতিপুতি সংখ্যা বাড়িয়ে পৃথিবী ভরে তোল”। ঈশ্বর দেখলেন যে, তা ভাল হয়েছে এবং তাতে খুবই সন্তুষ্ট হলেন । এটাই হলো ষষ্ঠ দিনে সৃষ্টিকর্ম।
ঈশ্বর সপ্তম দিনে তাঁর সব সৃষ্টিকর্ম করে সমাপ্ত করলেন। ঈশ্বর সপ্তম দিনকে আশীর্বাদ করে সেটিকে পবিত্র করলেন, কারণ এ দিনেই তিনি তাঁর সব সৃষ্টিকর্ম সম্পূর্ণ করে বিশ্রাম নিয়েছিলেন ।
Genesis 1-2