ঈশ্বর মোশেকে ডাকলেন
মোশের মৃত্যুর পর তাঁর সব আত্নীয়স্বজন ঈজিপে বাস করলেন । অনেক বছর ধরে তাদের বংশধর নিয়ে সেখানে বস্তিস্থাপন করলেন এবং অনেকগুলো সন্তান জন্ম লাভ করলেন । তাদেরকে ইস্রায়েলী বলে ডাকা হতো ।
হাজার বছর পর ইস্রায়েলীরা জনবহুল হয়ে উঠল ।যোসেফ তাদেরকে অনেক সাহায্য করলেন,কিন্তু ঈজিপতীয়দের তা বেশিদিন টিকে থাকল না । তারা ইস্রায়েলীদেরকে খুব ভয় পেলেন কারণ তারা তাদের চাইতে অনেক লোকসংখ্যা বেড়ে গেল । তাই ঈজিপের রাজা ফৌরণ তাদেরকে প্রজ্ঞাপুর্বক কাজ করাতে লাগলেন ।
ইস্রায়েলীদের বাধ্যতামুলকভাবে শহর, নগর নির্মাণের ইট ও চুণ সুরকির কাজের জন্য তাদের উপর কড়া তত্ত্বাবধায়কদের নিযুক্ত করলেন ।সব ধরনের কাজে কঠোর পরিশ্রম করিয়ে তারা তাদের জীবন দুর্বিসহ করে তুলল কিন্তু ঈশ্বর তাদের আশীর্বাদ করলেন এবং তাদের অনেক স্নতানসন্তুতি জন্ম লাভ হলেন।
ফরৌণ দেখলেন যে, ইস্রায়েলীরা বৃদ্ধি পেয়ে আরও জনবহুল হয়ে উঠল, তখন তিনি তার সব প্রজাদেরকে আদেশ দিলেন, সদ্যজাত প্রত্যেকটি ইস্রায়েলী পুত্রসন্তানকে তোমরা অবশ্যই নীল নদের ছুঁড়ে দিয়ে মেরে ফেলবে ।
ইস্রায়েলী এক মহিলা পুত্রসন্তান জন্ম দিলেন ।তিনি শিশুটিকে যতদুর সম্ভব লুকিয়ে রাখলেন ।
যখন শিশুটির মা তাকে লুকিয়ে রাখতে পারলেন না, তখন তিনি তার জন্য একটি ডালি তৈরী করলেন এবং পরে তিনি সেই শিশুটিকে ডালির মধ্যে শুইয়ে দিয়ে সেটি নীলনদের নলবনের মধ্যে প্রাণরক্ষার জন্য রেখে দিলেন । শিশুটির বোন দাঁড়িয়ে লক্ষ্য করলেন তার ভাইয়ের প্রতি কি ঘটতে চলেছে ।
পরে ফরৌণের মেয়ে সেই ডালিটিকে দেখতে পেলেন এবং ভিতরে দেখলেন । ডালির ভিতরে শিশুটিকে দেখতে পেলেন, এবং নিজের ছেলের মতো করে তাকে বাড়িতে নিয়ে গেলেন । অতএব সেই শিশুটির মাকে ডেকে নিয়ে আসলেন। মহিলাটি শিশুটিকে নিয়ে তার সেবা শুশ্রুষা করলেন । শিশুটি যখন বড় হয়ে উঠল, তখন তিনি তাকে ফরৌণ মেয়ের কাছে নিয়ে এলেন এবং শিশুটির তার ছেলে হয়ে গেল ।তিনি তার নাম দিলেন মোশে ।
মোশে বড় হয়ে যাবার পর একদিন তিনি দেখলেন, ঈজিপতীয় লোক ইস্রায়েলী এক ক্রীতদাসকে মারধর করছে । মোশে তখন তার ইস্রায়েলীকে বাঁচাতে চেষ্টা করলেন ।
চারিদিকে তাকিয়ে কাউকে দেখতে না পেয়ে তিনি সেই ঈজিপ লোকটিকে হত্যা করলেন এবং বালিতে পুঁতে দিলেন । কিন্তু মোশে ভয় পেয়ে ভাবলেন, আমি যা করেছি তা নিশ্চয় লোকেরা জেনে ফেলেছে ।
মোশের খবর রাজা ফৌরণ শুনতে পেলেন । তিনি মোশেকে হত্যা করার চেষ্টা করলেন, কিন্তু তখন মোশে ঈজিপ থেকে মিদিয়নের পালিয়ে গেলেন ।ফৌরণ সৈন্যরা তাকে সেখানে খোঁজে পেলেন না ।
ঈজিপ থেকে অনেক দূরে মিদিয়নের মোশে একজন মেষপালক হয়ে উঠলেন । মোশে সেখানে এক মেয়েকে বিয়ে করলেন এবং দু’সন্তান জন্ম লাভ করলেন ।
মোশি তার শ্বশুরের ভেড়ার পালকে যত্ন নিচ্ছেন। একদিন তিনি দেখতে পেলেন যে একটি গুল্ম আগুনে পুড়ে গেছে, বিনষ্ট না হয়ে জ্বলছে। তিনি এটি দেখতে ঝোপের কাছে গিয়েছিলেন। তিনি যখন খুব কাছাকাছি ছিলেন, তখন সৃষ্টিকর্তাশ্বর তাঁর সাথে কথা বলেছিলেন। তিনি বললেন, “মূসা, তোমার জুতো খুলে ফেল। তুমি পবিত্র মাটিতে দাঁড়িয়ে আছ! ”
তারপর ঈশ্বর বললেন, আমি সত্যিই আমার লোকদের দুঃখ দুর্দশা দেখেছি । আমি ফৌরণের কাছে তোমাকে পাঠাব যাতে তাদের উপর নিযুক্ত ক্রীতদাস কাজ থেকে মুক্ত করে, ঈজিপ দেশ থেকে মুক্তিপণ করে নিয়ে এসো । আমি তাদেরকে কনান দেশটি দেব, আমি আব্রাহাম,ইস্হাক এবং যাকোবের সাথে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম ।
মূসা জিজ্ঞাসা করলেন, "লোকেরা যদি জানতে চায় যে আমাকে কে পাঠিয়েছে, তবে আমি কী বলব?" Saidশ্বর বলেছিলেন, “আমিই আমি। তাদের বলুন, ‘আমিই আমাকে তোমার কাছে প্রেরণ করেছি।’ এগুলিও বলুন, ‘আমি সদাপ্রভু, তোমাদের পূর্বপুরুষ ইব্রাহিম, ইসহাক এবং যাকোবের সৃষ্টিকর্তাশ্বর।’ চিরকালই আমার এই নাম। ”
মোশি ভয় পেয়েছিলেন এবং ফেরাউনের কাছে যেতে চাননি কারণ তিনি ভেবেছিলেন যে তিনি ভাল কথা বলতে পারবেন না, তাই সৃষ্টিকর্তাশ্বর মোশির ভাই হারুনকে তাকে সাহায্য করার জন্য পাঠিয়েছিলেন।
Exodus 1-4