যীশু স্বর্গ থেকে প্রত্যাবর্তন
একদিন ঈশ্বর যীশুকে মৃত থেকে উত্থিত করলেন, তখন তার শিষ্য দুজন শহরের নিকটে হেঁটে যাচ্ছিল। তারা তখন যীশুর ঘটনার সম্পর্কে আলাপ করে হেঁটে যাচ্ছিল। তারা চিন্তা করল যে,তিনি একজন মেশিয়াহ ছিলেন।,কিন্তু তাকে হত্যা করা হয়েছিল।তখন মহিলাটি বলল তিনি আবার জীবিত হয়ে উঠবেন। তারা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারল না।
তারা যখন পরস্পরের মধ্যে এ সমস্ত আলোচনা করছিলেন, তখন যীশু স্বয়ং উপস্থিত হয়ে তাদের সঙ্গে পথ চলতে লাগলেন,কিন্তু দৃষ্টি রুদ্ধ থাকায় তারা তাকে চিনতে পারলেন না। তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, পথ চলতে চলতে তোমরা কি আলোচনা করেছিলে? তারা তাকে বললেন বিগত যীশুর ঘটনাবলির সম্পর্কে পূর্বাপর আলোচনা করছি। তারা চিন্তা করলেন যে তিনি একজন জেরুজালেমের কেবলমাত্র একজন পরিদর্শক,এই কয়েক দিনের সেখানে যা ঘটেছে তা কিছুই জানেন না।
তারপর যীশু মেশিয়াহ সম্পর্কে ঈশ্বরের কথিত বাক্য তাদেরকে ব্যাখা করলেন।অনেকদিন আগে নবী বললেন যে দুষ্ট লোকেরা মেশিয়াকে ভুগান্তি দিয়ে মৃত্যুদন্ধ দিতে পারে, কিন্তু নবী আরো বললেন তিনদিনের আবার তিনি মৃত থেকে উত্থিত হবেন।
যে গ্রামে তারা যাচ্ছিলেন,সেখানে পৌঁছানোর পর, প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এসেছে।তারা তাকে তাদের সঙ্গে থাকতে নিমন্ত্রণ করলেন, তাই তিনি তাদের সঙ্গে থাকার জন্য ভেতরে গেলেন। সন্ধ্যাবেলা ভোজের জন্য বসে পড়লেন। যীশু রুটি নিলেন, ধন্যবাদ দিলেন এবং তা ভেঙ্গে তাদের হাতে দিলেন।সেই মুহূর্তে তাদের চোখ খুলে গেল, তারা তাকে চিনতে পারলেন। কিন্তু সেই মহূর্তে তিনি তাদের চোখের সামনে থেকে অদৃশ্য হয়ে গেলেন।
দুজনেই পরস্পরকে বলতে লাগলেন “তিনিই ছিলেন যীশু! আমাদের সঙ্গে পথ চলতে চলতে তিনি যখন আমাদের কাছে শাশ্ত্রের মর্মোদ্ঘাটন করছিলেন, তখন আমাদের আবেগ জনিত উত্তাপ হচ্ছিল”। সেই মুহূর্তে তারা উঠে জেরুজালেমের ফিরে গেলেন। সেখানে পৌঁছে, শিষ্যদের বললেন, “যীশু জীবিত আছেন! আমরা তাকে দেখেছি”।
যখন শিষ্যরা বলাবলি করছিলেন, যীশু সেই মুহূর্তে তাদের সাথে রুমে দেখা করলেন। তিনি বললেন, “তোমাদের শান্তি হোক”! শিষ্যরা ভাবলেন তিনি একজন ভূত, কিন্তু যীশু বললেন, “কেন ভয় পাচ্ছ?তোমরা চিন্তা করতে পারছনা কেন সত্যিই আমি যীশু। আমার হাত এবং পাগুলো ছুঁয়ে দেখ। ভূতের এরকম অস্থি এবং মাংস নেই”। তোমরা দেখতে পাচ্ছ, আমার তা আছে,আমি ভূত নয়। তিনি কিছু খেতে চাইলেন, তারা তাকে আগুনে ঝলসানো এক টুকরা মাছ দিলেন,তিনি সেটি তাদের সামনে আহার করলেন।
যীশু বললেন, “তোমাদের সঙ্গে থাকার সময় আমি একথা বলেছিলাম, মেশিয়েহ বিধানে ভাববাদীদের গ্রন্থে আমার সম্পর্কে যা লেখা আছে, তার আবকিছুই পুর্ন হবে”। তাদের মনের দ্বার খুলে দিলেন,যেন তারা শাশ্ত্র বুঝতে পারেন। তিনি বললেন, “একথা লিখিত আছে, খ্রীষ্ট কষ্টভোগ করবেন ও তৃতীয় দিবসে মৃতলোক থেকে উত্থিত হবেন”।
“ভাববাদীদের কথিত আছে, আমার শিষ্যরা ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার করবেন। তারা সবাইকে অনুতপ্ত হোয়ার জন্য বলবেন। যদি তা হয়, ঈশ্বর তাদের পাপ ক্ষমা করবেন। আমার শিষ্যরা এই সুসমাচার প্রচারের জন্য জেরুজালেম থেকে আরম্ভ করবেন। আমার সমস্ত ঘটনাবলির এবং আমি যেগুলো করতে বলেছিলাম তোমরা সবাই স্বাক্ষী”।
পরবর্তী ৪০ দিনের সময়, যীশু অনেকবার তার শিষ্যদের আবির্ভুত হলেন। একই সময়ে তিনি আরো ৫০০ জনের অধিক লোকদের আবির্ভুত হয়েছিলেন! তিনি যে জীবিত আছেন,তার শিষ্যদেরকে বিভিন্নভাবে প্রমান করলেন এবং তিনি স্বর্গরাজ্য সম্পর্কে তাদেরকে শিক্ষা দিলেন।
যীশু শিষ্যদেরকে বললেন, “স্বর্গে ওপৃথিবিতে সমস্ত কর্তৃত্ব আমাকে দেওয়া হয়েছে। অতএব তোমরা যাও ও সমস্ত জাতি থেকে শিষ্য তৈরী করো, পিতার ও পুত্রদের পবিত্র আত্নার নামে তদের ব্যাতিশ্ম দাও। আর আমি তোমাদের যে সমশ্ত আদেশ দিয়েছি সেগুলো পালন করার জন্য তাদের শিক্ষা দাও। আর আমি নিশ্চিতরূপে যুগান্তর পর্যন্ত নিত্য তোমাদের সঙ্গে আছি”।
৪০ দিন পর যীশু মৃত থেকে উত্থিত হয়ে তার শিষ্যদের বললেন, “আমার পিতা তোমাকে ক্ষমতা না দেয়ার পর্যন্ত এই জেরুজালেমের অবস্থান করো। তিনি এতা করার জন্য পবিত্র আত্না পাঠাবেন। “তারপর যীশু স্বর্গে উন্নীত হলেন, এবং তাদের দৃষ্টি থেকে মেঘে তাকে আড়াল করলেন। সমস্ত জিনিসের উপর কর্তৃত্ব দেয়ার জন্য যীশু স্বর্গের পিতা ডান হাতের দিকে বসে পড়লেন।
Matthew 28:16-20; Mark 16:12-20; Luke 24:13-53; John 20:19-23; Acts 1:1-11