স্টেফেন এবং ফিলিপ
যীশুর প্রথম প্রেরিত শিষ্যদের মধ্যে একজন নাম স্টেফেন। সকলেই তাকে শ্রদ্ধা করতেন। পবিত্র আত্না তাকে প্রচুর ক্ষমতা এবং প্রজ্ঞা দিলেন. স্টেফেন অনেক অলৌকিক ঘটনা ঘটাতেন। অনেক লোক তাকে বিশ্বাস করত, যখন তিনি তাদেরকে স্বর্গ্রাজ্যের বিশ্বাসের কথা শিক্ষা দিতেন।
একদিন যখন স্টেফেন যীশুর সম্পর্কে শিক্ষা দিচ্ছিলেন, তখন যীশুর অবিশ্বাসী কিছু ইহুদীর লোক তার কাছে এসে তর্ক করতে শুরু করলো। তারা খুবই রেগে গেল, তাই তারা ধর্মীয় নেতাদের কাছে গিয়ে যীশুর সম্পর্কে মিথ্যা বলতে লাগল। তারা বলল, “আমরা স্টেফেনকে মোশে এবং ঈশ্বরের কথা অপপ্রচার করতে শুনেছি”। তাই ধর্মীয় নেতারা স্টেফেনকে গ্রেপ্তার করলেন এবং তাকে মহাযাজক ও ইহুদীদের অন্য নেতাদের কাছে নিয়ে গেলেন। অনেক মিথ্যা স্বাক্ষী এসে স্টেফনের বীরুদ্ধে কথা বলতে লাগল।
মহাযাজক স্টেফেনকে জিজ্ঞাসা করলেন, “এ লোকেরা তোমার সম্পর্কে যা বলছে তা কি সত্যি?” স্টেফেন অনেক কিছু বলে মহাযাজককে উত্তর দিলেন। তিনি বললেন আব্রাহাম থেকে শুরু করে যীশুর সময় পর্যন্ত ঈশ্বর ইস্রায়েল লোকদের জন্য অনেক আচর্য্য, অদ্ভুদ কাজ করেছিলেন। কিন্তু লোকেরা সবসময় ঈশ্বরের অবাধ্য হত। স্টেফেন বললেন, “তোমার লোকেরা তখন ঈশ্বরের বীরুদ্ধে একগুঁয়েমি হয়ে বিদ্রোহ করেছিল”। আপনি সবসময় পবিত্র আত্না প্রত্যাখান করেন, ঈশ্বরের প্রেরিত শিষ্যদেরকে প্রত্যাখান করেন এবং তাঁর যাজকদেরকে হত্যা করেন”। আপনিও তাদের মতো কিছু পাপ কাজ করলেন! আপনি মেশিয়াহকে মৃত্যুদন্ধ দিলেন”।
ধর্মীয় নেতারা একথা শুনে, তার প্রতি এতই ক্রোধ উম্মত্ত হল যে তার কর্ণ রুদ্ধ করল এবং উচ্চকণ্ঠে চিৎকার করতে লাগল। তারা স্টেফেনকে শহরে বাইরে টেনে নিয়ে গেল এবং পাথর নিক্ষেপ করে মেরে ফেলল।
স্টেফেন নিবন্ত অবস্থায় চিৎকার করে বললেন, “প্রভু যীশু,আমার আত্নাকে তুমি গ্রহন করো”। তিনি নতজানু হয়ে চিৎকার করে বললেন, “প্রভু, এদের বিরুদ্ধে তুমি এপাপ ধরো না”। তারপর তিনি মরে গেলেন।
সেদিন জেরুজালেমের অনেক লোক যীশুর অনুসারীদের কষ্ট দিতে শুরু করল। তাই তারা অন্য জায়গায় চলে গেলেন। কিন্তু পরিবর্তে তারা যেখানে যায় সেখানে প্রত্যেক জায়গায় যীশু সম্পর্কে প্রচার করতে লাগলেন।
সেখানে যীশু প্রেরিত এক শিষ্য ছিল নাম ফিলিপ। তিনিও আন্য প্রেরিত শিষ্যদের মতো জেরুজালেম ছেরে চলে গিয়েছিলেন। তিনি সামারিয়া অঞ্চলে গেলেন যেখানে তিনি যীশুর বাক্য লোকদেরকে প্রচার করতেন। আনেক লোক তাকে বিশ্বাস করল এবং রক্ষা পেল। একদিন প্রভুর দূত ফিলিপের কাছে এসে বললেন, তুমি মরুভুমিতে চলে যাও এবং এপথ দিয়ে হেঁটে যাও। ফিলিপ সেখানে চলে গেলেন। হেতে যাওয়ার সময় পথে রথ চড়ে একজন লোকের সাথে দেখা হলো। তিনি ছিলেন ইথিওপিয়া দেশে একজন গুরুপ্তপুর্ণ আধিকারিক। পবিত্র আত্না ফিলিপকে তার কাছে গিয়ে কথা বলতে বললেন।
তাই ফিলিপ রথের দিকে গেলেন। তিনি ইথিওপিয়া সেই ব্যক্তিকে ভাববাদী গ্রন্থ পাঠ করতে শুনলেন। তিনি ভাববাদীর যিশাইয়ের লেখা গ্রন্ঠ পাঠ করছিলেন। তিনি এই অংশটি পাঠ করছিলেন, “তিনি মেষের ন্যায় ঘাতকের কাছে নীত হ্লেন,মেষশাবক যেমন লোমচ্ছেদনকারীদের সামনে নীরব থাকে, তেমনই তিনি তার মুখ খুললেন না। তার অবমাননা-কালে তিনি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হলেন। তার বংশধরদের কথা কে বলতে পারে? কারন পৃথিবী থেকে তার জীবন অপসৃত হলো”
ফিলিপ ইথিওপিয়ানকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনি যেটা পড়ছেন, সেটা কি বুঝতে পারেন?” তিনি উত্তরে বললেন, “ না, কেউ আমাকে এর ব্যাখা না করে দিলে ,আমি কি করে বুঝতে পারব?” দয়া করে আসুন এবং আমার পাশে বসুন। যিশাই এখানে কার সম্পর্কে একথা বলেছেন, নিজের বিষয়ে, না অন্য কারো সম্পর্কে?”
ফিলিপ রথের ভেতরে গিয়ে বসে পরলেন। তখন ফিলিপ শাশ্ত্রে সে অংশ থেকে শুরু করে তার কাছে যীশুর বিষয়ে সুসমাচার প্রচার করলেন। ফিলিপ আরো ঈশ্বরের অনেক বাক্যের অংশ এবং যীশুর সুসমাচার কথা তাকে বললেন।
তারা যখন পথে যাচ্ছিলেন,তারা এক জলাশয়ের কাছে এসে পৌঁছালেন। ইথিওপিয়ান বললেন, “দেখ, এখানে কিছু পানি আছে! আমি কি ব্যাতিশ্ম নিতে পারি?” এবং তিনি রথ চালককে রথ থামাতে বললেন।
তাই তারা পানিতে নেমে পরলেন,এবং ফিলিপ তাকে ব্যাতিশ্ম দিলেন। তারা পানি থেকে উঠার পর,পবিত্র আত্না হঠাৎ ফিলিপকে অন্য জায়গায় চালিত করলেন। সেখানে ফিলিপ অবিরামভাবে লোকদেরকে যীশু সম্পর্কে বলতে লাগলেন।
ইথিওপিয়ান তার বাড়ীর দিকে চলতে লাগলেন। এখন তিনি যীশুর সম্পর্কে জানতে পেরে খুবই আনন্দিত হলেন।
Acts 6:8-8:5; 8:26-40