শৌল যীশুর অনুচর হলেন
শৌল নামে একজন লোক ছিলেন যিনি যীশুকে বিশ্বাস করতেন না। তার যৌবনের সময়, মানুষের পোশাক সুরক্ষিত করতেন যিনি স্টেফেনকে হত্যা করেছিলেন। পরে তিনি প্রভু শিষ্যদের ভীতি প্রদর্শন করতেন। তিনি জেরুজালেমের ঘরে ঘরে নারী পুরুষ নির্বিশেষে প্রভু অনুসারীদের গ্রেপ্তার করে কারারুদ্ধ করার জন্য গেলেন। তখন মহাযাজক শৌলকে ডামেস্কা শহরে যাওয়ার জন্য অনুমতি দিলেন। তিনি শৌলকে যীশুর অনুচারিদেরকে গ্রেপ্তার করে জেরুজালেমের ফিরে নিয়ে আসতে বললেন।
তাই শৌল ডামেস্কা যাত্রা শুরু করলেন। তিনি ডামাস্কা শহরে নিকটবর্তী হলে হঠাৎ আকাশ থেকে এক আলো তার চারপাশে দ্যুতিমান হয়ে উঠল এবং তিনি ভুমিতে পতিত হলেন ও এক কন্ঠশ্বর শুনতে পেলেন, “শৌল! শৌল!,তুমি আমাকে কেন নির্যাতন করছ?” শৌল জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনি কে ,প্রভু?” যীশু তার উত্তরে বললেন, “আমি যীশু। যাকে তুমি নির্যাতন করছ!”
শৌল ভুমি থেকে উঠে দাঁড়ালেন, কিন্তু চোখে কিছুই দেখতে পেলেন না। তাই তার বন্ধুরা তাকে ডামাস্কার দিকে নিয়ে গেলেন।শৌল তিন দিন ধরে কোনকিছু খাদ্য বা পানি পান করলেন না।
ডামাস্কাসের এক প্রেরিত শিষ্য ছিলেন নাম অনানিয়াস।প্রভু তাকে বললেন, “যাও সেই বাড়ীতে যেখানে শৌল অবস্থান করছেন। তার উপরে তোমার হাতগুলো রাখো, সে যেন আবার দৃষ্টি ফিরে পায়,” কিন্তু অনানিয়াস বললেন, “প্রভু, আমি শুনেছি তিনি কিভাবে বিশ্বাসীদেরকে নির্যাতন করেন,” প্রভু উত্তর দিলেন, “যাও! আমি তাকে ইহুদীর লোক এবং অন্য জনগোষ্ঠীর লোকদের কাছে আমার নাম প্রচারের জন্য নিযুক্ত করেছি। আমার নামে সে অনেক কষ্ট ভোগ করবে”।
তাই অনানিয়াস শৌলের কাছে গেলেন, তার উপরে হাত রেখে বললেন, “যীশু, যিনি আপনার এখানে আসার সময় পথে আপনাকে দর্শন দিয়েছেন, তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন,যেন আপনি দৃষ্টি ফিরে পান ও পবিত্র আত্নায় পুর্ণ হন”। সঙ্গে সঙ্গে শৌল আবার দেখতে পেলেন,এবং অনানিয়াস তাকে বাপ্তাইজিত দিলেন। তারপর কিছু খাদ্য গ্রহন করে তার শক্তি ফিরে পেলেন।
অচিরেই ডামাস্কাস ইহুদীদেরকে প্রচার করতে লাগলেন,এবং বললেন, “যীশুই ঈশ্বরের পুত্র”! ইহুদীরা চমকিত হলেন কারণ শৌল যীশু বিশ্বাসীদের হত্যা করতে চেয়েছিলেন, এখন তিনি যীশুকে বিশ্বাস করলেন! শৌল ইহুদীদের সাথে তর্ক করতে লাগলেন। তিনি দেখালেন যে যীশু ছিলেন মেশিয়াহ।
আনেকদিন পর ইহুদীরা শৌলকে হত্যার পরিকল্পনা করলেন। তাকে হত্যা করার উদ্দেশে অনেক লোক নগরদ্বারে পাহারা দিতে পাঠিয়ে দিলেন। কিন্তু শৌল তাদের পরিকল্পনার কথা জানতে পারলেন এবং তার বন্ধুরা তাকে পালানোর জন্য সাহায্য করলেন। এক রাত্রিবেলা তার অনুগামীরা তাকে একটি ঝুড়িতে করে প্রাচিরের অপরপাশে নামিয়ে দিলেন। জেরুজালেম থেকে শৌল পালানোর পর, তিনি সবসময় প্রভুর নামে প্রচার করতে লাগলেন।
শৌল শিষ্যদের সাথে দেখা করতে জেরুজালেমের চলে গেলেন, কিন্তু তারা তাকে ভয় পেলেন। তারপর একজন বিশ্বাসী নাম বারনাবাস তাকে শিষ্যদের কাছে নিয়ে গেলেন। তিনি শিষ্যদের বললেন,তিনি কিভাবে ডামাস্কাস নির্ভীকভাবে যীশুর নামে প্রচার করলেন। তারপর শিষ্যরা শৌলকে গ্রহন করলেন।
জেরুজালেমের নির্যাতিত হয়ে পালিয়ে যাওয়ার কিছু প্রেরিত শিষ্য এনশো অনতিদূরে শহরে গিয়ে যীশুর নামে প্রচার করতে লাগলেন। এনশো অধিকাংশ লোক ইহুদী ছিল না। প্রথমে যারা ইহুদী নয়,তারা প্রভুকে বিশ্বাস করলেন। বার্নাবাস এবং শৌল সেখানে গিয়ে নতুন শিষ্যদেরকে যীশুর নামে অনেক বাক্য শিক্ষা দিলেন এবং মন্দির শক্তিশালী হয়ে উঠল। তাই এনশো শিষ্যদেরকে যীশু প্রথমে ‘খ্রীস্টিয়ান’ নামে ডাকলেন।
একদিন এনশোটে যীশুর অনুচারীরা উপবাস এবং প্রার্থনা করছিলেন। পবিত্র আত্না তাদেরকে বললেন, “আমার জন্য জায়গা কর বার্নাবাস এবং শৌল একাজ করতে হবে,আমি তাদেরকে তা করতে ডেকেছিলাম”। তাই এনশো মন্দিরের বার্নাবাস এবং শৌলের নামে প্রার্থনা করলেন এবং তাদের হাত তাদের উপরে রাখলেন। তারপর তারা তদেরকে অনেক জায়গায় যীশুর নামে সুসমাচার প্রচার করতে পাঠালেন। বার্নাবাস এবং শৌল বিভিন্ন জনগোষ্ঠীকে শিক্ষা দিলেন এবং অনেক লোক যীশুকে বিশ্বাস করলেন।
Acts 8:3; 9:1-31; 11:19-26; 13:1-3