মন্দির শুরু
যীশু স্বর্গ থেকে ফেরার পর ,শিষ্যরা জেরুজালেমের অবস্থান করছিলেন ঠিক তার আদেশের মতো। বিশ্বাসীরা সেখানে জরো হয়ে অবিরামভাবে জড়ো হয়ে প্রার্থনা করছিলেন।
প্রতি বছর নিশ্তারপর্বে ৫০ দিন পর,ইহুদিদের গুরুপ্তপুর্ন দিন পেন্টেকষ্ট উৎযাপন করা হতো। পেন্টেকস্ট হচ্ছে এমন একদিন, ইহুদিরা গম কাটার সময় উৎযাপন করে থাকেন। পেন্টেকস্ট একসাথে উৎযাপনের জন্য পৃথিবীর সর্বত্র থেকে জেরুজালেমের লোক আসতো। এ বছর পেন্টেকস্ট উৎযাপনের প্রায় এক সপ্তাহ পর যীশু স্বর্গে ফিরে গেলেন।
যখন বিশ্বাসীরা সমবেত হলেন, হঠাৎ আকাশ থেকে প্রবল বায়ুপ্রবাহের মতো একটি শব্দ ভেষে এল এবং তারা যেখানে বসেছিলেন, সেই গৃহে সর্বত্র ব্যাপ্ত হলো। তারা দেখতে পেলেন, যেন জিহবাকৃতির আগুন, যা অংশ অংশ হয়ে বিশ্বাসীদের প্রত্যেকের উপরে অধিষ্ঠান করল। আর তারা সবাই পবিত্র আত্না পরিপুর্ণ হলেন, আত্না যেমন সক্ষমতা দিলেন, তারা অন্য ভাষায় কথা বলতে লাগলেন। তারা এভাষা জানত না, কিন্তু পবিত্র আত্নার মাধ্যমে তাদেরকে কথা বলতে সক্ষম করলেন।
যখন জেরুজালেমের লোকেরা শব্দের আওয়াজ শুনতে পেল, তারা একত্রিত হয়ে সেই স্থানে এসে কি ঘটেছিল দেখার জন্য ভীর করল। তারা বিশ্বাসীদের এ মহৎ স্বর্গ্রাজ্যের কথা শুনতে পেলেন। তারা বিস্মিত হলেন,কারন্ তাদের মধ্যে প্রত্যেকেই তার নিজস্ব ভাষায় এবং ভিন্ন দেশে ভিন্ন ভষায় তাদের কথা বলতে শুনল।শিষ্যরা সবাই ইস্রায়েলের এবং তারা এরামাইক,হিব্রু এবং গ্রীক ভাষায় কথা বলছে,আমাদের নিজস্ব ভাষায় তারা ঈশ্বরের বিশ্ময়কর কীর্তির কথা ঘোষনা করছে।
কেউ কেউ পরিহাস করে বলল, এরা অত্যধিক দ্রাক্ষারস পান করেছে। তিন্তু পিতর উপরে উঠে জনতার উদ্দেশে সম্বোধন করলেন,“মনোযোগ দিয়ে শুনুন ! এই লোকেরা মত্ত নয়! পরিবর্তে তোমরা যা দেখছ,ভাববাদী যোয়েল এই ঘটনার কথাই ব্যক্ত করেছিলেন। ঈশ্বর বলেন, ‘অন্তিমকালে, আমি সব মানুষের উপর আমার আত্না ঢেলে দেব”।
“ইস্রায়েলী জনগন, একথা শুনুন, যীশু বহু অলৌকিক কর্ম, বিস্মকর ঘটনা ও নিদর্শনের মাধ্যমে প্রকাশ্যে আপনাদের কাছে ঈশ্বরের দ্বারা স্বীকৃত মানুষ ছিলেন।সেসব কর্ম ঈশ্বর মাধ্যমে করেছেন। আপনারা আবগত আছেন এবং সবকিছুই দেখছেন।কিন্তু তাকে তোমরা ক্রুশবিদ্ধ করেছ”।
“যীশু মরে গেলেন, কিন্তু ঈশ্বর তাকে মৃত থেকে উত্থিত করেছেন। নবী যেটা লিখল সত্য হয়ে আসলঃ ‘তিনি পাতালের গর্ভে পরিত্যক্ত হবেন না কিংবা তাঁর শরীর ক্ষয় দেখবে না। এই যীশুকেই ঈশ্বর জীবনে উত্থাপিত করেছেন এবং আমরা সকলেই এই ঘটনার স্বাক্ষী”।
“ঈশ্বরের ডানদিকে উন্নীত হয়ে তিনি পিতার কাছ থেকে প্রতিশ্রুত পবিত্র আত্না লাভ করেছেন এবং আমাদের উপরে ঢেলে দিয়েছেন। যেমন আপনারা দেখছেন ও শুনছেন”।
“যীশুকে আপনারা ক্রুশে বীদ্ধ করেছেন, কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে প্রভু মেশিয়াহ , এই উভয় করেছেন”।
জনতা যখন একথা শুনল,তাদের হৃদয় ক্ষতবিক্ষত হল। তারা পিতর ও অন্য প্রেরিত শিষ্যদের বলল, “ভাইরা আমরা কি করব?”
পিতর উত্তর দিলেন, “তোমাদের সবাইয়ের পাপ ক্ষমা হওয়ার প্রয়োজন। আপনারা প্রত্যেকে মন পরিবর্তন করুন ও যীশু খ্রীস্টের নামে ব্যাতিস্ম গ্রহন করুন, তাহলে আপনারা পবিত্র আত্নার দান প্রাপ্ত হবেন”।
প্রায় ৩,০০০ লোক পিতরের কথা বিশ্বাস করে যীশুর ভাববাদী শিষ্য হলেন। তারা ব্যাতিস্ম গ্রহন করে জেরুজালেমের মন্দিরের অধিকারভুক্ত হলেন।
বিশ্বাসকারীরা অবিরামভাবে ভাববাদীদের শিক্ষা শুনতে লাগল।তাদের প্রায়ই পরস্পরের দেখা হত এবং একসাথে খেত, এবং একসাথে প্রার্থনা করত। তারা একত্রে ঈশ্বরের প্রশংসা করত এবং নিজেদের কোনো কিছুর অংশ প্রত্যেকে ভাগ করে নিত। শহরে সকল লোকদেরকে ভাল শিক্ষা দিতে লাগল। প্রত্যেকদিন অনেক লোক বিশ্বাসী হয়ে উঠল।
Acts 2